পণ্য: সূর্যমুখী তেল
ওজন: ১০০ মিলি
সূর্যমুখী তেল
*হৃদ্রোগ, অ্যাজমা ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
*সূর্যমুখীর তেলে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকে, যা আমাদের দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।
*এই তেলে ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা মানসিক চাপ কমায়।
*শরীরের ওজন কমানোর জন্য রান্নায় আজকাল এই তেল বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
র্যমূখী তেলের উপকারিতা ও গুনাগুণ
আমাদের দেশের পরিচিত একটি তেল হচ্ছে সূর্যমূখী তেল। সূর্যমূখী এক ধরণের একবর্ষী ফুল গাছ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে।
এ গাছ প্রায় ৩ মিটার (৯.৮ ফুট) লম্বা হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরন করা হয়েছে।
সূর্যমুখী ফুল নিজের পরিচয় সবার কাছে তুলে ধরে তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ করার মাধ্যমে। সূর্যমুখী তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত।
সূর্যমূখী তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে। এছাড়াও আরো অনেক গুন রয়েছে এই তেলের।
তাহলে আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক সূর্যমূখী তেলের নানা ধরনের উপকারি গুণাগুণ সম্পর্কে-
ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ
জটিল ব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে খুবই পারদর্শী সূর্যমুখীর তেলে থাকা সেলেনিয়াম উপাদান। এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম উপাদান আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। মাইগ্রেনের সমস্যা এবং আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এই উপাদান।
হাড়ের সমস্যা সমাধানেঃ
হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, দেহের চামড়ায় জ্বালা-পোড়া, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ সারিয়ে তুলতে এই তেল খুবই উপকারী।
শরীরের ব্যাথা ও ক্ষয় রোগ দূর করেঃ
এই বীজে আছে ভিটামিন-ই যা আমাদের দেহের নানা রকম ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। সেই সাথে সূর্যমুখী বীজের তেলে বিদ্যমান ভিটামিন-ই আমাদের ত্বককে রক্ষা করে সূর্যের আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি থেকে। ত্বকের অযথা বুড়িয়ে যাওয়া এবং ক্ষয় রোধে এই তেল খুবই উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
সূর্যমুখী বীজ আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দারুণভাবে কার্যকরী করে তোলে।
পুষ্টিগুণে ভরপুরঃ
প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকায় সূর্যমুখী বীজের তেল আমাদের দুর্বলতা কাটাতে কার্যকরী। আমাদের দেহের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং দীর্ঘদিন কর্মক্ষম রাখতেও সূর্যমুখী তেলের ভূমিকা অনন্য।
এছাড়া সূর্যমুখী বীজ আমাদের দেহের হাড় সুস্থ রাখে ও মজবুত করে। আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও কপার এর চাহিদা পূরণ করে সূর্যমুখী তেল।
Sunflower oil - সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা এবং অপকারিতা।
Sunflower oil - সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা এবং অপকারিতা। - সূর্যমুখী আমাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি ফুল। হলুদ রঙের এবং মাঝখানে বীজগুলো থাকে এই ফুলের।
সূর্যমুখী ফুল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার উপকারিতা। আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে জেনে নেব সূর্যমুখী বীজ এবং তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু অজানা তথ্য।
সূর্যমুখীর বিজ্ঞান সম্মত নাম কি?
সূর্যমুখীর বিজ্ঞান সম্মত বা বৈজ্ঞানিক নামটি হল Helianthus Annuus ।
সূর্যমুখী গাছের উৎপত্তি:
সূর্যমুখী গাছের আদি নিবাস হল মধ্য দক্ষিণ আমেরিকায়। সূর্যমুখী গাছের উৎপত্তিস্থল হলো পেরু এবং মেক্সিকোতে। আমেরিকানরা প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে সূর্যমুখী ব্যবহার করে আসছে। আর বর্তমানে সূর্যমুখী তেল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একটি তেল।
সূর্যমুখী গাছ কেমন হয়?
সূর্যমুখী গাছ হল একটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এই গাছের উচ্চতা প্রায় ৩ মিটারে মধ্যে। সূর্যমুখী কান্ড সোজা ও পাতা রুক্ষ এবং লোমযুক্ত হয়। সূর্যমুখী ফুল হলুদ রঙের এবং বড় হয়। আর ফুলের মাঝখানে বীজ থাকে।
সূর্যমুখী বীজ এর মধ্যে কি কি পুষ্টি আছে জেনে নেব।
সূর্যমুখী বীজ এর পুষ্টিগুণ:
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন ডি
- ভিটামিন বি
- ভিটামিন বি ৬
- ম্যাঙ্গানিজ
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- জিংক
- সেলেনিয়াম
- আয়রন
- ফাইবার
এবার আমরা জেনে নেব সূর্যমুখী বীজের উপকারিতা সম্পর্কে।
সূর্যমুখী বীজের উপকারিতা:
সূর্যমুখী ব্রিজ এর মধ্যে কলেস্টরলের এবং সোডিয়াম খুব কম মাত্রায় থাকে তাই এটি আপনার হার্টের জন্য খুবই উপকারী। সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, থায়ামিন, কপার, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এর ভালো উৎস। প্রতিদিন যদি নিয়মিত পুষ্টি বজায় রাখতে চান তাহলে এই সূর্যমুখী বীজ খাওয়া উচিত।
১. সূর্যমুখী বীজ হৃদ রোগের জন্য উপকারী।
সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই। যা হৃদ রোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি ধমনীতে কোলেস্টেরল জমাতে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং হার্ট অ্যাটাকে এবং স্ট্রোকের কমাতে সাহায্য করে ।
২. সূর্যমুখী বীজ হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী বীজ হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কারণ সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার যা আপনার শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, হজম সমস্যা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
পাইলসের চিকিৎসায় সূর্যমুখীর বীজ গুঁড়ো করে। এর সাথে তিন থেকে ছয় গ্রাম চিনি মিশিয়ে খাবেন। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য কয়েক ফোটা সূর্যমুখী তেল দুধে মিশিয়ে খেতে পারেন।
৩. সূর্যমুখী বীজ শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখীর বীজ শরীরে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট। যা লিভারে গ্লুকোজেনকে রক্ত প্রবাহে নিঃসরণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও সূর্যমুখীর পাতার পেস্ট লিভার এবং ফুসফুসের প্রদাহ দূর করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৪. সূর্যমুখী বীজ মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, সূর্যমুখী বীজের মধ্যে অবস্থিত ট্রিপটোফ্যানের উচ্চ উপাদান আছে। সেই কারণে এটি আপনার মস্তিষ্ককে শান্ত প্রভাব ফেলে। এছাড়াও আপনার মেজাজকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী বীজ এর মধ্যে আছে কলিন যা স্মৃতিশক্তি এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. সূর্যমুখীর বীজ হাড় এবং পেশির জন্য উপকারী।
সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে আয়রন যা আপনার শরীরে পেশীতে অক্সিজেন যোগায়। এছাড়াও সূর্যমুখী বীজের মধ্যে যে জিংক যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এবং কাশি-সর্দি থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে।
এছাড়াও সূর্যমুখী বীজের মধ্যে আছে ম্যাগনেসিয়াম যা হারের দৈহিক গঠন এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
এবার আমরা জেনে নেব সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা সম্পর্কে।
সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা:
১. সূর্যমুখী তেল ত্বকের যত্নে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী তেল ত্বকের যত্নে সাহায্য করে কারণ সূর্যমুখী তেলের মধ্যে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। যা ত্বককে ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ব্রণ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। সূর্যমুখী তেল ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ব্যাকটেরিয়া থেকে ত্বকের রক্ষা করতে সাহায্য করে।
২. হাঁপানির জন্য সূর্যমুখী তেল উপকারী।
হাঁপানির জন্য সূর্যমুখী তেল খুবই উপকারী। সূর্যমুখী তেলের মধ্যে অন্যান্য তেলের চেয়ে ভিটামিন ই এর পরিমাণ বেশি আছে। আর ভিটামিন ই হাঁপানি উপশমে সাহায্য করে। তাই হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন পরিমাণ মতো সূর্যমুখী তেলের রান্না খান।
৩. চুলের যত্নে সূর্যমুখী তেল সাহায্য করে।
সূর্যমুখি তেল চুলের যত্নে খুবই উপকারী একটি উপাদান। সূর্যমুখী তেলের মধ্যে আছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা চুলের জন্য খুবই উপকারী।
৪. সূর্যমুখী তেল কোলেস্টেরলের জন্য খুবই উপকারী।
সূর্যমুখী তেল কোলেস্টেরলের জন্য খুবই উপকারী। কারণ সূর্যমুখী তেলের মধ্যে আছে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিঅনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।
এবার আমরা জেনে নেব সূর্যমুখীর অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য।
সূর্যমুখীর অপকারিতা:
- বাজারে পাওয়া যায় সূর্যমুখীর লবণাক্ত বীজ যা খেলে শরীরে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ হতে পারে।
- সূর্যমুখীর পুরনো বীজ খেলে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, পেটে জ্বালা ,গ্যাস হতে পারে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় সূর্যমুখী বীজ খেলে শরীরে ক্ষতি হতে পারে।
- অনেকের সূর্যমুখী উদ্ভিদ থেকে অ্যালার্জি হতে পারে, তাই যাদের অ্যালার্জি আছে তারা সতর্কভাবে ব্যবহার করবেন।
- সূর্যমুখী বীর্যের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার আর যদি অতি নিত্য সূর্যমুখী সেবন করা হয় তাহলে গ্যাস হতে পারে, পেটে ব্যথা হতে পারে।
সূর্যমুখী তেল সম্পর্কে অন্যান্য কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর:
সূর্যমুখী বীজ খেলে কি হয়?
সূর্যমুখী বীজের মধ্যে যে ভিটামিন ই। যেটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। সূর্যমুখীর বীজ যদি প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে বাতের রোগ, অ্যাজমা নিরাময় হবে।
সূর্যমুখী ফুল দিয়ে কি করা হয়?
সূর্যমুখী ফুল দিয়ে সূর্যমুখী তেল বা ঘি এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেটা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত।
সূর্যমুখী ফুলের গন্ধ কেমন?
সূর্যমুখী ফুলের গন্ধ নেই। তবে ফুলটি দেখতে সুন্দর। চারিদিকে হলুদ পাপড়ি এবং মধ্যখানে অনেক বীজ।
সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে শীর্ষ দেশ কোনটি?
সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চল শীর্ষে আছে।
সূর্যমুখী মানে কি?
সূর্যমুখী মানে হল হলুদ রঙের পুষ্প বিশেষ।
সূর্যমুখী ফুলের রং কি?
সূর্যমুখী ফুলের রং হলো হলুদ রঙের।
উপসংহার:
আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে জেনে নিলাম সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য। Sunflower oil - সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা এবং অপকারিতা। এছাড়াও জানলাম সূর্যমুখী ফলের বীজের উপকারিতা, সূর্যমুখী গাছ কেমন হয়, সূর্যমুখী কেমন হয় ইত্যাদি সমস্ত রকম বিষয় জেনে নিলাম। ধন্যবাদ জানাই বন্ধুদেরকে যারা আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি বোধগম্য হয়েছে এবং ভালো লেগেছে। সুস্থ থাকুন।