সোনা পাতার ভেষজগুণ
সোনা পাতা দেখতে অনেকটা মেহেদি পাতার মতো। শুকনা অবস্থায় হালকা হলুদ সোনালি বর্ণের হয়। এতে খনিজ, লবণ, ক্যালসিয়াম ও ফ্লাবিনয়েড নামে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা প্রধানত জোলাপ বা রেচক হিসেবে কাজ করে।
উপকারিতা - কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রোধে সোনা পাতা খুব ভালো কাজ করে।
এই পাতা পিচ্ছিল হওয়ায় মানবদেহের বৃহদন্ত্রে পানি ও ইলেকট্রোলাইট শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে অন্ত্রের উপাদানগুলোর ভলিউম চাপ বৃদ্ধি করে এবং কোলনের সঞ্চালন উদ্দীপ্ত হয়। অল্প সময়ের মধ্যে খুব সহজে দেহ থেকে মল নিষ্কাশিত হয়। এ জন্য সোনা পাতাকে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের মহৌষধ বলা হয়।
- সোনা পাতায় এনথ্রানয়েড নামের একটি উপাদান রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে কার্যকর রাখতে সহায়তা করে।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।
- ক্ষুধা ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
- অর্শ রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
- ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ভালো কাজ করে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধি প্রণালী ১ : এই পাতা আস্ত অথবা গুঁড়া করে ব্যবহার করা যেতে পারে।
যদি গুঁড়া ব্যবহার করা হয়, তাহলে এক বা দেড় চা-চামচ এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে চার-পাঁচ ঘণ্টা। এরপর সকালে খালি পেটে পান করতে হবে (দিনে ২০-৩০ গ্রাম এবং একবারের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়)।
প্রণালী ২ : দুই কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ শুকনা পাতা ফুটিয়ে এক কাপ পরিমাণ করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চায়ের মতো পান করতে হবে।
পেট নরম হয়ে এলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে গেলে এই পাতার ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।
সতর্কতা অন্ত্রের ক্ষত, প্রদাহ, অ্যাপেন্ডিসাইটিস ও যকৃতের ক্যান্সারের রোগীদের সোনা পাতা ব্যবহার না করাই উত্তম।
সোনা পাতা উপকারিতাঃ-
- সোনা পাতার স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সোটিভ প্রভাব রয়েছে, যা পেট পরিষ্কার রাখতে ওষুধের মতো কাজ করে।
- ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) বা পেট ব্যাথা, পেটফাঁপা, পেটে অসস্থি,পাতলা পায়খানা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যার প্রকৃতিক সমাধান এই সোনা পাতা।
- সোনা পাতার অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ব্যাক্টেরিয়া এবং ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে মুক্তি দিবে
- সোনা পাতায় উপস্থিত সংক্রিয় উপাদান অ্যানথ্রাকুইনোন ড্রাইবেটিস এবং গ্লুকোসাইড দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
সেবনবিধি
- রাতে আধা চা চামচ সোনাপাতা গুঁড়া আধা গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে ছেকে নিয়ে অল্প কুসুম গরম পানি মিশিয়ে চায়ের মত পান করতে হবে। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য।
সতর্কতা ১. অন্ত্রের প্রদাহ, আলসার ও আমাশয় রোগী, এপেনহিসাইটিস রোগী ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে সোনাপাতা ব্যবহার করা যাবে না। সপ্তাহে দুই দিন বা তিন দিনের বেশি সেবন করা উচিৎ না। ২. ডায়াবেটিস বা অন্যান্য সমস্যা থাকলে ১ চা চামচ শিমুল মূল গুঁড়া হাফ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ও রাতে পান করা যায়। ৩. অপ্রাপ্ত বয়স্কদের সেবন নিষেধ।
- সোনাপাতা গুড়াঃ
- উপকারিতাঃ
- ১.কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রোধ করে।
- ২.হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- ৩.গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে।
- ৪.ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ৫.রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ৬.কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
- ৭.অশ্ব রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
- ৮.ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় কাজ করে।
- ৯.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ১০.পেট পরিষ্কার করে।
- সেবন পদ্ধতিঃ ১০-১৫ গ্রাম সোনাপাতা গুড়া ১ গ্লাস পানিতে রাতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খালি পেটে পান করুন।
- বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অন্ত্রের ক্ষত,প্রদাহ,অ্যাপেন্ডিসাইটিস ও যকৃত ক্যান্সার রোগীদের সোনাপাতা গুড়া ব্যবহার না করাই ভালো। দিনে ১ বারের বেশি পান করবেন না। সপ্তাহে ২-৩ দিন।