পণ্য: দুলাল চন্দ্র ভর
ওজন: ২০০ গ্রাম
মিছরির উপকারিতা ও অপকারিতা
মিছরির উপকারিতাযেমন- আনিমিয়া, হাড়ের সমস্যা, সর্দি কাশির উপশম, চোখের দৃষ্টি বাড়ানো, কিডনি স্টোন, পেটে ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মুখের আলসার, কন্সটিপেশন, গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ, ডায়রিয়া, শিশুদের ব্রেন ডেভেলপমেন্ট, আর্থারাইটিস, শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা, স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্যও তালমিছরি খুব উপকারী।
তাল মিছরিতে যত পুষ্টি
মৌসুম বদলের এই সময় অনেক শিশুই ঠাণ্ডা বা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে৷ শিশুদের ঠাণ্ডা লাগলে স্বভাবতই চিন্তা একটু বাড়ে। কারণ এতে করে শিশুর খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম, সব কিছুতেই সমস্যা তৈরি হয়। পাশাপাশি খাওয়ার রুচিও কমে যায়। ঠাণ্ডা বা জ্বরের এ সময় তালমিছরি ভীষণ উপকারী।
মৌসুম বদলের এই সময় অনেক শিশুই ঠাণ্ডা বা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে৷ শিশুদের ঠাণ্ডা লাগলে স্বভাবতই চিন্তা একটু বাড়ে। কারণ এতে করে শিশুর খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম, সব কিছুতেই সমস্যা তৈরি হয়। পাশাপাশি খাওয়ার রুচিও কমে যায়। ঠাণ্ডা বা জ্বরের এ সময় তালমিছরি ভীষণ উপকারী।
তালমিছরি হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এক ধরনের চিনিজাতীয় দ্রব্য। তালমিছরিতে থাকে তালের রস। তালরস জ্বাল দেওয়া হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এরপরে সেটিকে ট্রে বা কোনো পাত্রে ঢালা হয়।
সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।
তালমিছরির পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএনকে হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট মুশফিকা রাখি বলেন, 'তাল মিছরিতে প্রচুর পরিমাণ অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিন, মিনারেলস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফসফরাস ও অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। এটি একটি সহজলভ্য উপাদান। ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায় তালমিছরিতে। তাই যারা নিরামিষ জাতীয় খাবার খান, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী।'
পুষ্টিবিদ মুশফিকা রাখির মতে তালমিছরির উপকারিতা:
১. যাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য তালমিছরি খুব উপকারী। আয়রন রক্তের লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
২. বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে থাকে। যেমন: হাড় ক্ষয় হওয়া কিংবা হাঁটুতে ব্যথা থাকা। এসব ক্ষেত্রেও তালমিছরি খুবই উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। যে কারণে এটি হাড় ও দাঁত শক্ত করে তোলে ও হাড়ের নানা রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩. মেনোপজের পর নারীদের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। তা রোধ করতে নিয়মিত তালমিছরি খাওয়া উচিত।
৪. শিশুদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখার জন্য তালমিছরি খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে।
৫. সর্দি ও কাশি দূর করতে পারে তালমিছরি। এর রস কাশি উপশম করে ও গলার শ্লেষ্মা নরম করে দিতে সাহায্য করে। ফলে খুসখুসে কাশির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এক টুকরো তালমিছরি মুখে নিয়ে রাখলে সর্দি ও কাশিতে অনেক আরামও পাওয়া যাবে।
৬. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও কিডনির পাথর রোধ করতেও সহায়তা করে তালমিছরি। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে তালমিছরি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে রাখা যেতে পারে।
৭. তালমিছরি হজমে সাহায্য করে এবং আমাশয় নিরাময়ে সহায়ক। এ ছাড়া, মুখের আলসার বা ঘা রোধ করতে পারে তালমিছরি। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।
৮. অনেকেরই সাইনাসজনিত মাথাব্যথার সমস্যা থাকে। আদার রসের সঙ্গে তালমিছরি মিশিয়ে খেলে সাইনাসজনিত মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
মিষ্টি স্বাদের মিছরি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর স্বাদ অনেকটা চিনির মতো হলেও এটি ক্ষতিকর নয়। নানা রোগের চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে মিছরি ব্যবহার করা হয়। এর আছে অনেক গুণ। নিয়মিত মিছরি কিংবা মিছরি ভেজানো পানি খেলে সুস্থ থাকার প্রক্রিয়া সহজ হয়। এটি সহজলভ্য বলে প্রতিদিন খেতে পারবেন।
মিছরি মূলত চিনির অপরিশোধিত রূপ। আখ এবং খেজুরের রস থেকে এটি তৈরি করা হয়। এর শুরুটা হয়েছিল ভারতে, এখন বিভিন্ন দেশে মিছরি তৈরি ও ব্যবহৃত হয়। এতে চিনির তুলনায় মিষ্টি থাকে কম। আবার খেতেও সুস্বাদু। মিছরিকে ইংরেজিতে বলা হয় রক সুগার। মিছরি বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। মিছরি দেখতে সাধারণত সাদা হয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন রং ব্যবহার করেও একে আকর্ষণীয় করা হয়। জেনে নিন মিছরির উপকারিতা-
ওজন কমায়
ওজন বৃদ্ধি নিয়ে মুশকিলে পড়েন অনেকেই। বর্তমান সময়ে এটি পরিচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তবে তা সহজ হবে যদি নিয়মিত চিনির বদলে মিছরি খেতে পারেন। মিছরি ও মৌরি গুঁড়া করে তা একসঙ্গে রেখে দেবেন এবং নিয়মিত খাবেন, এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। যেসব রান্নায় চিনি ব্যবহার করতেন সেগুলোতে চিনির বদলে মিছরি ব্যবহার শুরু করুন। কারণ মিছরিতে উপকারিতা অনেক বেশি।
হজমে সাহায্য করে
হজম ভালো থাকলে মুক্ত থাকা যায় নানা ধরনের অসুখ থেকে। আর আপনার হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ করবে মিছরি। মৌরি দিয়ে মিছরি খেলে তা হজম ব্যবস্থাকে উন্নত করে। মিছরিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান হজমে সাহায্য করে। তাই হজমশক্তি ভালো রাখতে দুপুর ও রাতের খাবারের পর মিছরির সঙ্গে মৌরি মিশিয়ে খেতে পাবেন।
রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণ করে
মিছরি খেলে তা রক্তস্বল্পতার মতো অসুখ সারাতে কাজ করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মিছরি রাখুন। মিষ্টি স্বাদের এই উপকারী খাবার আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে। সেইসঙ্গে এটি উন্নত করে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়াকেও। তাই রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত মিছরি খেতে পারেন।
শক্তি বৃদ্ধি করে
মিছরি হলো চিনির অপরিশোধিত রূপ সেকথা তো জেনেছেনই। তাই চিনিতে প্রচুর সুক্রোজ পাওয়া যায়, যা থাকে মিছরিতেও। এটি আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই দুর্বল বোধ করলে সঙ্গেসঙ্গে মিছরি কিংবা মিছরি ভেজানো পানি খেতে পারেন। যারা শরীরচর্চা করেন তারাও নিয়মিত মিছরি খেতে পারেন।
সর্দি-কাশি সারায়
মুখে মিছরি ও এলাচ রেখে দিলে তা সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। আবার মিছরি, এলাচ ও বাদম দিয়ে এক ধরনের খাবারও হয়। এটি বাড়িতে তৈরি করে রাখলে তা পরবর্তীতে সর্দি-কাশি হলে কাজে লাগবে। সেজন্য সমপরিমাণ মিছরি ও বাদাম পিষে তার মধ্যে পরিমাণমতো পানি দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। তার মধ্যে দিয়ে দিতে হবে এলাচ। ভালোভাবে গলে গেলে এবং মিশ্রণটি ফুটে উঠলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর ঢাকনাযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। সর্দি-কাশি দেখা দিলে এটি খেলে উপকার মিলবে।
মিছরির অপকারিতা
মিছরি নিয়মিত খাওয়া ভালো তবে অন্যান্য খাবারের মতোই এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন অতিরিক্ত মিছরি খেলে কী সমস্যা হতে পারে- * হজম ভালো করার জন্য মিছরি খাওয়া হয়। কিন্তু এটি অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা তৈরি হতে পারে।
* মিছরি কিছুটা শীতল ধরনের। তাই এটি অতিরিক্ত খেলে অনেক সময় ঠান্ডা লাগা বা সর্দির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
* আপনি যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ খেয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে মিছরি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ মিছরি ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটাতে পারে।