- চিয়া সিডঃ উপকারিতাঃ
- ১.শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ২.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ৩.ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ৪.ব্লাড সুগার ( রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে। ফলে ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমায়।
- ৫.হড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করে।
- ৬.মলাশয় পরিষ্কার করে।
- ৭.শরীর থেকে টক্সিন ( বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়।
- ৮.প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করে।
- ৯.ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে।
- ১০.ক্যান্সার রোধ করে।
- ১১.হজমে সহায়তা করে।
- ১২.হাটু ও জয়ন্টের ব্যাথা দূর করে।
- ১৩.ত্বক চুল ও নখ সুন্দর রাখে।
- সেবন পদ্ধতিঃ ১ গ্লাস পানিতে ২ চা-চামচ চিয়া বীজ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে এবং রাতে খাওয়ার পরে সেবন করবেন। বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মেদ ভূড়ি কমাতে চাইলে গরম পানি দিয়ে সেবন করুন। চিয়া সিড (Chia seed) বা চিয়া বীজ মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিসপানিকা (Salvia Hispanica) উদ্ভিদের বীজ। এই অতি উপকারি বীজটির আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং সেখানকার প্রাচীন আদিবাসি অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এই বীজ অন্তর্ভুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন মায়া এবং অ্যাজটেক জাতির মানুষ চিয়া সিডকে সোনার থেকেও মূল্যবান মনে করত। তারা বিশ্বাস করত এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে। তবে বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জেও চিয়া সিড পাওয়া যায়।
চিয়া বীজ সাদা ও কালো রং এর এবং তিলের মত ছোট সাইজের হয়। চিয়া একটি সুপার সীড যাতে আছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড; কোয়েরসেটিন (Quercetin) কেম্পফেরল (Kaempferol), ক্লোরোজেনিক এসিড (Chlorogenic acid) এবং ক্যাফিক এসিড (Caffeic acid) নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট; পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্যআঁশ (ফাইবার)।
চিয়া সিড (Chia seed) এর পুষ্টিগুণ
• এটা শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে • চিয়া সীড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে • চিয়া বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে • চিয়া সিড ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায় • চিয়া বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি • চিয়া সিড মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় • চিয়া সিড শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয় • চিয়া সীড প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে • চিয়া সীড ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে • চিয়া বীজ ক্যান্সার রোধ করে • চিয়া সীড এটেনশান ডেফিসিট হাইপার এক্টিভিটি ডিসর্ডার (Attention deficit hyperactivity disorder ADHD) দূর করে
চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
স্বাস্থ্যের ভাষায় চিয়া সিডকে সুপারফুড বলা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। দুধ ডিমের থেকেও চিয়া সিডে বেশি প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে বলেই জানা যায়।
চিয়া সিড কী?
চিয়া সিড একটি গাছের বীজ। শস্যে জাতীয় উদ্ভিদ যা মরুভূমিতেই বেশি জন্মায়। জানা যায়, প্রাচীন অ্যাজটেক জাতির প্রধান খাদ্য তালিকায় এটি রাখা হতো। চিয়া সিড দেখতে অনেকটা তিলের দানার মতো। আমেরিকা ও মেক্সিকোতে চিয়া নামে এক ধরনের গাছ হয়। এই গাছের বীজকেই চিয়া সিড বলে।
একনজরে চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিডে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালংশাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩ রয়েছে।
এতে আরও রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।
আরও পড়ুন: ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড এর উপকারিতা
১. পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা-৩ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
২. ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে কাজ করে এই বীজ।
৩. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
৪. মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৫. ডায়বেটিসের ঝুঁকিও কমে যায় এই বীজ খেলে।
৬. চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে তাই কোলন ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে।
৭. এটিতে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে যায়।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
পানিতে ভিজিয়ে সহজেই খাওয়া যায় চিয়া সিড। চাইলে ওটস, পুডিং, জুস, স্মুথি ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়েও খেয়ে নেয়া যায়। এ ছাড়া কেউ চাইলে টকদই, সিরিয়াল, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন। স্বাভাবিক পানি কিংবা হালকা কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখবেন চিয়া সিড। এরপর সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। আবার ঘুমানোর আগেও এটি খাওয়া যায়।
চিয়া সিড এর অপকারিতা
১. গবেষণায় জানা গেছে, চিয়া সিড প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ভালোর কথা ভেবে বেশি বেশি না খেয়ে এটি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
২. পরিমাণের থেকে বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে, এটি খারাপ হতে পারে।
সব জিনিসেরই ভালো-খারাপ থাকে। চিয়া সিডে ভালোর পরিমাণ বেশি হলেও কিছুটা খারাপ প্রভাবও দেখা যায় মাঝে মাঝে। এটা ব্যবহারের উপরও নির্ভর করে।
আরও পড়ুন: বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে স্বাস্থ্যসচেতনদের প্রতিদিনের ডায়েট আলো করে থাকে এই বীজ। এই বীজের উপকারিতার শেষ নেই। খাবার বেক করার ক্ষেত্রেও চিয়া বীজ ব্যবহার করা হয়। আবার পুডিংয়ের সঙ্গেও এই বীজ খাওয়া যেতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ এই বীজ দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে খেলেই বাড়তি উপকারিতা পাওয়া যায়। চিয়া ওজন কমায় ঠিকই, কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহারে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যাও।