পণ্য: ক্যাস্টর অয়েল
ওজন: ২০০ মিলি
ক্যাস্টর অয়েল এর কিছু অজানা উপকারিতা
- ছোট্ট শিশুদের পেটব্যাথা উপশমে
- ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে
- মেকাপ রিমুভার হিসেবে
- চোখের পাপড়ি ঘন করতে
- আরথ্রাইটিস এর ব্যথা কমাতে
- ত্বক ফেটে যাওয়া রোধে
- ত্বকের বলিরেখা দূর করতে
- পেট পরিষ্কার রাখতে
ত্বক ও চুলের যত্নে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের ১২ উপায়
ক্যাস্টর অয়েল ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। ছবি- সংগৃহীত
ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে ফ্য্যাটি অ্যাসিড ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এসব উপাদান ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। শুষ্ক ও রুক্ষ চুল এবং মাথার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে পারে ক্যাস্টর অয়েল। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য খুশকি কমাতে সহায়ক। চুল পড়া কমাতেও এর রয়েছে ভূমিকা। চুলের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও এর রয়েছে অনস্বীকার্য ভূমিকা। জেনে নিন রূপচর্চায় ক্যাস্টর অয়েল কোন কোন উপায়ে ব্যবহার করবেন।
- ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে অলিভ অয়েল ও নারকেল তেল মিশিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে। চুল হমে মোলায়েম ও ঝলমলে।
- ক্যাস্টর অয়েলে তুলা ভিজিয়ে ভ্রু ও চোখের পাপড়িতে লাগান। রাতে ঘুমানোর আগে লাগাবেন। ঘন ও কালো হবে চোখের পাপড়ি এবং ভ্রু।
- ত্বকের দাগছোপ দূর করতে পারে উপকারী এই তেল। এজন্য দাগের স্থানে নিয়মিত মালিশ করুন ক্যাস্টর অয়েল।
- ক্যাস্টর অয়েলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্যাটি অ্যাসিড ব্রণের দাগ দূর করতে পারে। এজন্য দাগের উপর সরাসরি লাগান এটি।
- সমপরিমাণ নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ঠোঁটে ও ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ত্বকে জমে থাকা মরা চামড়া দূর হবে।
- ভেজা ত্বকে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে এটি।
- নখে ক্যাস্টর অয়েল লাগালে কিউটিকেল ভালো থাকে। নখ সুন্দর ও মসৃণ দেখায়।
- ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বক নরম হবে।
- ত্বকের বলিরেখা দূর করতে প্রতিদিন আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন ক্যাস্টর অয়েল।
- হাতের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে আমন্ড অয়েলের সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ম্যাসাজ করুন।
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বের করে ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।
- সমপরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল ও পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলে লাগান। ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পেঁয়াজের গন্ধ দূর করতে চাইলে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন হেয়ার প্যাকে।
ক্যাস্টর অয়েল | চুলের বৃদ্ধিতে ও চুল গজাতে কতটা কার্যকরী?
চুল আমাদের সৌন্দর্যের অনেক বড় একটা অংশ বহন করে। সেই চুলই যদি ক্রমাগত ঝরে গিয়ে মাথায় টাকের সৃষ্টি করে তাহলে কী আর দুঃখের সীমা থাকে! তাই চুল পড়া নিয়ে আমাদের চিন্তার অন্ত নেই। আজকের দিনে আমরা মোটামুটি সবাই এই সমস্যায় ভুগছি। চুল পড়ার নানান কারণ থাকতে পারে- এর মধ্যে রয়েছে দুশ্চিন্তা, অপর্যাপ্ত ঘুম, অতিরিক্ত কাজের চাপ, অসুস্থতা, বংশগত সমস্যা, পরিবেশের প্রভাব ইত্যাদি। এ সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য ক্যাস্টর অয়েল হতে পরে অনন্য একটি উপায়।
ক্যাস্টর অয়েল, এই নামটি অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন। তবে বাস্তবতা হলো, এর প্রকৃত গুনাগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো খুব কমই জানি। তবে চলুন জেনে নিই এই তেলে কি রয়েছে। ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে ভিটামিন ই, মিনরেলস, প্রোটিন, এসেন্সিয়াল ফ্যাটি এসিড যা চুল পড়া রোধ করার সাথে সাথে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। এটি চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করে এর স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনে। তবে চুলের জন্যে সর্বদা আনরিফাইনড ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করাই উত্তম।
আপনার মনে হতে পারে কেন আনরিফাইনড ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে হবে? কারণ আনরিফাইনড ক্যাস্টর অয়েলে প্রাকৃতিক গুণাবলী বিদ্যমান যা চুল এবং স্ক্যাল্পের জন্য খুবই কার্যকরী। রিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েল বিভিন্ন প্রসেসিং এর মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে এর মধ্যে প্রাকৃতিক গুণাবলী ততোটা থাকে না যা আনরিফাইনড ক্যাস্টর অয়েল এ থাকে এবং ফলশ্রুতিতে এটি যথেষ্ট কম কার্যকরী। বাংলাদেশে আপনারা Well’s Castor Oil নামে এই অয়েলটি পাবেন। দাম পড়বে ১৫০-১৮০ টাকা এর মধ্যে। তবে এটা কেমিক্যালি রিফাইন্ড। এতে চুলের তেমন কোন কাজ হয় না।
স্কিনক্যাফে (skin cafe) ব্রান্ডের যে ক্যাস্টর তেল বাজারে পাওয়া যায় ওটা বেশ ভাল একটা তেল – এটি ১০০% পিউর, ন্যাচারাল আর আনরিফাইন্ড। দাম পড়বে ৫৫০ টাকা। তবে এখন বিশেষ ছাড়ে শপ.সাজগজ.কম এ তেলটি পাচ্ছেন ৪৭০ টাকায়।
তাছাড়া tropical isle এর Jamaican Black Castor Oil এর দাম পড়বে ১৭৭০ টাকা। মানেগুণে দুটি তেল-ই অসাধারণ!
চুল পড়া রোধে ক্যাস্টর অয়েল
(১) চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ হলো স্ক্যাল্পের ইনফেকশন এবং ডিসঅর্ডার। ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাস স্ক্যাল্পকে আক্রান্ত করে দিনে দিনে চুল ঝরাকে বাড়িয়ে দেয় এবং চুলের বৃদ্ধিকে হ্রাস করে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রপার্টিস স্ক্যাল্পের ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করে যা চুল পড়া কমিয়ে আনে অনেকাংশে।
(২) শুষ্কতা বা রুক্ষতা চুল পড়া এবং চুল ভাঙ্গার আরেকটি প্রধান কারণ। ক্যাস্টর অয়েল সহজেই স্ক্যাল্পে শোষিত হয়। ফলে স্ক্যাল্পের ময়েশ্চার এবং নিউট্রিশনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে যা চুলের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।
নতুন চুল গজাতে ক্যাস্টর অয়েল
(১) ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে ভালো মতো ম্যাসাজ করলে এটি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন যত বাড়বে এর অবস্থা তত উন্নত হবে এবং হেয়ার ফলিকলগুলো আরও সুস্থ্য থাকবে। ফলে তা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
(২) ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রধান কাজই হলো চুলের এবং স্ক্যাল্পের বিষাক্ত পদার্থ হ্রাস করে চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করা।
(৩) ক্যাস্টর অয়েল ওমেগা – ৯ ফ্যাটি আসিড (Omega-9 fatty acids) এবং এসেন্সিয়াল ভিটামিনস এ সমৃদ্ধ যা চুলকে মজবুত এবং উজ্জল করে ও পুনরায় চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধি
(১) যেহেতু এই তেল খুব ঘন তাই এটি চুলে লাগানোর পূর্বে রেগুলার চুলের তেল (কোকোনাট অয়েল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল) এর সাথে মিশিয়ে লাগালে সুবিধা হবে। স্ক্যাল্পে ভালো মতো ম্যাসাজ করে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা রাখতে হবে। তেল লাগানোর পর হেয়ার ক্যাপ অথবা হট টাওয়েল চুলে পেঁচিয়ে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এরপর চুলে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। আরও ভালো ফল চাইলে তেল লাগিয়ে পুরো রাত রেখে দিতে পারেন।
(২) চুলের গ্রোথ বাড়ানোর জন্য হট অয়েল ট্রিটমেন্ট হিসেবেও ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে তেল গরম করে নিতে হবে। প্রক্রিয়া টি সহজ করার জন্য ক্যাস্টর অয়েলের বোতলটি গরম পানির একটি গ্লাসে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর স্ক্যাল্পে ভালো মতো ম্যাসাজ করূন।
উপরের নিয়ম দু’টি অনুযায়ী তেলটি ব্যবহার করলে আশা করি এক মাসের মধ্যেই ভালো ফল পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েল এর কিছু হেয়ার মাস্ক
(১) এক চা চামচ মধু, দুই চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং একটি ডিম ভালো মতো মিশিয়ে চুলে ভালো মতো লাগান। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি আপনার নিষ্প্রাণ এবং রুক্ষ চুলের উজ্জলতা বাড়িয়ে একে নরম করবে।
(২) সমান পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল, তিলের তেল এবং অলিভ অয়েল ভালো মতো মিশিয়ে চুলে এবং স্ক্যাল্পে ভালো মতো লাগিয়ে গরম তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি একটি খুবই কার্যকর হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে যা চুল এবং স্ক্যাল্পকে খুব ভালো ভাবে কন্ডিশন্ড করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
টিপস
(১) যদি ক্যাস্টর অয়েল অন্য কোনো তেলের সাথে না মিশিয়ে মাথায় লাগাতে চান, তবে খুব অল্প পরিমাণ তেল নেবেন এবং শুধু স্ক্যাল্পে লাগাবেন। কারণ ক্যাস্টর অয়েল খুব ঘন হওয়ায় এটি পুরো চুলে লাগালে পরে ওঠানো নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।
(২) রাতে ক্যাস্টর অয়েল মাথায় দিয়ে ঘুমালে হেয়ার ক্যাপ অথবা তোয়ালে মাথায় পেঁচিযে নিন যাতে বালিশে দাগ না লাগে অথবা বালিশে একটি কাপড় পেঁচিযে নিন।
(৩) চোখের পাপড়ি ঘন করতে চাইলেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন ক্যাস্টর অয়েল। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে কটন বাড্স বা তুলার সাহায্যে ব্রু বা পাপড়িতে লাগাবেন তেলটি। সকালে ধুয়ে ফেলবেন। এক মাসের মধ্যেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন।