পণ্য: (ব্রামি)-ব্রাহমী গুড়া
ওজন: ১০০ গ্রাম
ব্রাহ্মীর সাতটি গুণ
বিশ্ব বর্তমানে প্যানডেমিকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে । পৃথিবীজুড়ে বহু মানুষ মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ অনুভব করছেন, যার জন্য তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ বিঘ্নিত হচ্ছে । তবে মানসিক চাপ প্রশমন এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপের সক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য প্রচুর ওষুধপত্র এবং থেরাপি রয়েছে । আয়ুর্বেদেও একাধিক ঔষধি গাছগাছড়া রয়েছে, যা এই কাজে ব্যবহৃত হয় আর ব্রাহ্মী তাদের মধ্যে অন্যতম ।
7 Benefits Of Brahmi
ব্রাহ্মী অথবা বাকোপা মন্নিয়েরি, যাকে ‘হার্ব অফ গ্রেস’ও বলা হয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভিদ, যার উল্লেখ প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ওষুধপত্রে পাওয়া যায় । আমরা হায়দরাবাদের AMD আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক, MD আয়ুর্বেদ, রাজ্যলক্ষ্মী মাধবমের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেছিলাম আর তিনি জানিয়েছেন, “সুশ্রুতাচার্য ব্রাহ্মীকে মেধা রসায়ন বলে অভিহিত করেছিলেন, যা সব ধরনের মানসিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয় ।” তিনি এর আরও কিছু ঔষধি গুণাগুণ ব্যাখ্যা করেছেন, যা হল–
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা : ব্রাহ্মী স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ব্রাহ্মী পাঠ করার ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয় । এটি মস্তিষ্কের জ্ঞানগর্ভ ক্রিয়াকলাপের বিকাশ ঘটায় এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে ।
- অ্যালজাইমার্স : কিছু কিছু নিউরোলজিক্যাল সমস্যা যেমন পারকিনসনস এবং অ্যালজাইমার্স কোনও মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত । ব্রাহ্মীর যেহেতু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার গুণাগুণ রয়েছে, তাই এটি মস্তিষ্কের কোষের পুর্নজন্মে সাহায্য করে । এবং এটি অ্যালজাইমার্স রোগের মতো ‘ডিজেনারেটিভ’ নিউরোলজিক্যাল সমস্যা নিরাময়েও সহায়ক ।
- মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ হ্রাস করে : আমাদের জীবনে বর্তমানে যখন এত কিছু ঘটে চলেছে, বিশেষ করে যখন ভবিষ্যত সম্পর্কে এত অনিশ্চয়তা চারদিকে, তখন উদ্বেগ, ভয়, মানসিক চাপের অনুভব প্রভৃতি হওয়া খুবই সাধারণ । এই সব কিছু কেবলমাত্র কারও মানসিক স্বাস্থ্যেরই অবক্ষয় ঘটায় না, বরং এতে তার শারীরিক স্বাস্থ্যও বিঘ্নিত হয় । ব্রাহ্মী এমনই একটি ঔষধি উদ্ভিদ, যা আপনার মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ প্রশমন করতে সাহায্য করে, আর শরীরে কর্টিসল তথা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ হ্রাস করে ।
- স্লিপ ডিসঅর্ডার : মস্তিষ্কে যখন এত কিছু ঘটে চলেছে, তখন শান্তির প্রগাঢ় নিদ্রা হওয়া খুবই কঠিন হতে পারে, এমনকী অত্যন্ত ক্লান্তিকর একটা দিন কাটানোর পরেও । ব্রাহ্মী সেবনে ভাল ঘুম হয়, কারণ এটি মনকে শান্ত এবং চিন্তামুক্ত রাখে ।
- ডায়াবিটিস : সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ব্রাহ্মী অ্যান্টি-ডায়াবিটিক ওষুধ হিসাবেও ব্যবহার হতে পারে । ব্রাহ্মী রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যার ফলে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
- অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট : ব্রাহ্মীতে অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ গুণাগুণ রয়েছে, যা শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালসের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা দেয় । ফ্রি র্যাডাক্যালস কোষের ক্ষতি করে । ফ্রি র্যাডিক্যালস শরীরের যে ক্ষতি করে, তার জেরে হার্টের রোগ এবং ক্যানসারের বেশ কিছু ধরনের মতো দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা হতে পারে । সুতরাং, ব্রাহ্মী শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে ।
- অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার (ADHD) : আমরা যেমন জানি, ব্রাহ্মী নানা ধরনের নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে অতি সক্রিয় । তেমনভাবেই এটি শিশুদের ADHD-র উপসর্গ প্রশমন করতেও অত্যন্ত কার্যকরী ।
কীভাবে ব্রাহ্মী গ্রহণ করব?
ব্রাহ্মী ভটি (ট্যাবলেট), ব্রাহ্মী চূর্ণ (পাউডার তথা গুঁড়ো) এবং ব্রাহ্মী তৈল (তেল) এই তিন ভাবে ব্রাহ্মী পাওয়া যায় । যদিও আয়ুর্বেদের ঔষধি গাছগাছড়ার মধ্যে এটিই সবচেয়ে নিরাপদ, তাও কত ডোজ়ে ব্রাহ্মী গ্রহণ করা উচিত, তা জানতে কোনও আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন, যিনি আপনার শারীরিক পরিস্থিতি বুঝে ওষুধের ডোজ় বলে দেবেন ।
আয়ুর্বেদের সেরা ঔষধি গাছগাছড়াগুলির মধ্যে ব্রাহ্মী অন্যতম সেরা এবং এটি যে অত্যন্ত সক্রিয়, তাও প্রমাণিত । তাই, আমরা যখন রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত ওষুধপত্রের সেবন এড়াতে এবং কমাতে চাই, কারণ এর বেশি কিছু গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে, তখন আমাদের জন্য প্রাকৃতিক ওষুধপত্র গ্রহণ করাই হল সব থেকে সেরা বিকল্প ।
Brahmi For Health: ব্রাহ্মী শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ফলে রক্ত পরিষ্কার থাকে...
বহু বছরের পুরনো জটিল রোগ সারাতে এখনও অনেকেই ভরসা করেন আর্য়ুবেদের উপর। সেই প্রাচান কাল থেকে চলে আসছে। এখনও হাতের সামনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক থাকলেও ইদানিং কালে চল বেড়েছে আর্য়ুবেদ ব্যবহারে। আর্য়ুবেদে অনেক রকম শক্তিশালী ভেষজ গাছপালা এবং শেকড়-বাকড় রয়েছে। যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণ আছে। নিম, তুলসী, অশ্বগন্ধা, এসব বহু বছর ধরে ব্যবহার করা হয় আর্য়ুবেদিক ওষুধ তৈরিতে। আর সেই তালিকাতে রয়েছে ব্রাক্ষ্মীও। ব্রাক্ষ্মী শাকের মধ্যেও একাধিক ঔষুধি গুণ রয়েছে। মূলত ভেজা মাটি বা জলের ধারেই এই শাক বেশি হয়। এছাড়াও অনেকে বাড়িতেও লাগান এই শাক। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ব্রাক্ষ্মী শাক ভীষণ রকম উপকারী। এই শাক স্বাদে তেতো। তবে ঘি-দিয়ে এই শাক খেতে পারলে অনেক রকম উপকার পাওয়া যায়। এখনও অনেক বাড়িতেই এই শাক ব্যবহার করা হয়।
কেরালা আর্য়ুবেদ অনুয়ারে, সবচেয়ে প্রাচীন আর্য়ুবেদ হিসেবে পরিচিত এই ব্রাহ্মী। মনকে শান্ত রাখতেও ভূমিকা রয়েছে এই শাকের। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, যৌন শক্তি বাড়াতে এবং সুস্বাস্থ্যের জন্যও কিন্তু উপকারী ব্রাহ্মী শাক। ব্রাহ্মী শাক থেকে টনিকও তৈরি করা হয়। রক্ত শুদ্ধ করতে, ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্য রক্ষাতেও ভূমিকা রয়েছে এই শাকের। এছাড়াও আরও যে সব উপকারিতা রয়েছে ব্রাহ্মী শাকের-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ব্রাক্ষ্মী শাকের মধ্যে রোগ প্রতিরোধকারী প্রচুর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই রোজ এই ব্রাক্ষ্মী শাক খেলে শরীরে বল বাড়ে। রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। যাঁরা অল্পেই কাহিল হয়ে পড়েন তাঁদের জন্য ব্রাহ্মী শাকের জুস কিন্তু খুবই ভাল। বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রাহ্মী শাক। তাই রোজ একচামচ এই শাক-পাতা খেতে পারলেই উপকার টের পাবেন ৭ দিনে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও ভূমিকা রয়েছে ব্রাহ্মী শাকের। মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাল অংশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যা আমাদের চিন্তা-ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করে।
উদ্বেগ কমাতে
ব্রাহ্মী শাক স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমায়। সেই সঙ্গে কর্টিসলের মাত্রাও রাখে নিয়ন্ত্রণে। এই হরমোন স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত। আজকালকার দিনে সকলের জীবনেই প্রচুরস চাপ। বেশিরভাগই উদ্বেগ হতাশায় ভুগছেন। সেক্ষেত্রে এই শাক খুবই ভাল কাজ করে।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে
ব্রাহ্মী শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি কোষ থেকে ক্ষতিকর দূষিত বের করে দেয়। ফলে ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
বাতের ব্যথা কমাতে
বাত এবং প্রদাহ জনিত, ব্যথা, জ্বালা কমাতেও উপকারী এই ব্রাক্ষ্মী শাক। যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও রোজ খেলে উপকার পাবেন। আলসারের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয় এই শাক।
রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে
ব্রাক্ষ্মী শাক ডায়াবেটিসের রোগীদের শরীরে রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যাঁদের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য খুব ভাল এই ব্রাহ্মী শাক। যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁরা গরম ভাতে সামান্য ঘি দিয়ে এই শাক খেলে উপকার পাবেন।